রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইলে আপনাকে সমস্ত আর্টিকেলটি পড়তে হবে। Proshno Jagat এর সমস্ত আর্টিকেল লেখা হয় খুবই অভিজ্ঞ ব্যক্তির দ্বারা ফলে আপনি একদম সঠিক উত্তর পাবেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা
“মৃত্যুকে দূরেই রাখি জীবনের পাগ্নি আলোয় চোখে রাখি সর্বদা পূর্ণতার প্রতীক কবিকে”
—বিষ্ণু দে
ভূমিকা: মৃত্যুর পরে সাতটি দশক পার করে দিয়েও রবীন্দ্রনাথ আজও বাঙালির জাতীয় জীবনে এক অমলিন উপস্থিতি। তাঁর ১৫০তম জন্মজয়ন্তীতে তাই আজও বিনম্র মুগ্ধতায় প্রণাম জানাতে দ্বিধাবোধ করে না বাঙালি । বাঙালির স্মৃতি-সত্তা-ভবিষ্যৎ জুড়ে থেকে যায় একটিই ইতিহাস মন্থন করা ব্যক্তিত্ব—রবীন্দ্রনাথ।
কবিরে পাবে না তার জীবনচরিতে: ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫শে বৈশাখ জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারে রবীন্দ্রনাথের জন্ম। পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, মা সারদাদেবী। রবীন্দ্রনাথ শৈশব-কৈশোরে নর্মাল স্কুল, ওরিয়েন্টাল সেমিনারি, সেন্ট জেভিয়ার্স ইত্যাদি বিদ্যালয়ে ভরতি হলেও কোনোদিনই প্রথাগত শিক্ষার সঙ্গে একাত্ম হতে পারেননি। মাত্র তেরো বছর বয়সে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায় কবির প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় । ১৮৭৮ সালে প্রকাশিত হয় প্রথম কাব্যগ্রন্থ কবি কাহিনী। এরপর কবিতা, উপন্যাস, নাটক, ছোটোগল্প, প্রবন্ধ ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে কবির সৃজনী প্রতিভা নিজেকে মেলে দেয়। কাব্যগ্রন্থের মধ্যে মানসী, সোনার তরী, চিত্রা, বলাকা, পত্রপুট, পুনশ্চ ইত্যাদি। উপন্যাসের মধ্যে বৌ- ঠাকুরানীর হাট, চোখের বালি, গোরা, ঘরে-বাইরে, চতুরঙ্গ, শেষের কবিতা ইত্যাদি, আর নাটকের মধ্যে ডাকঘর, মুক্তধারা, রক্তকরবী, বিসর্জন ইত্যাদি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। রবীন্দ্রনাথের স্মরণীয় সব ছোটোগল্প সংকলিত হয়েছে গল্পগুচ্ছতে। প্রাবন্ধিক রবীন্দ্রনাথ তার রচনাসমূহে সমকাল, রাষ্ট্রনীতি, বিজ্ঞান সাহিত্য ইত্যাদি নানা বিষয়ে ভাবনা চিন্তার পরিচয় রেখেছেন, যেগুলি প্রকাশিত হয়েছে পঞ্চভূত, ভারতবর্ষ, চারিত্র্যপূজা, প্রাচীন সাহিত্য, লোকসাহিত্য ইত্যাদি গ্রন্থে। রবীন্দ্রনাথের বহুমুখী প্রতিভা এবং বিচিত্র বিদ্যায় দক্ষতা বিষ্ময়ের বস্তু। ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে Songs Offering গ্রন্থের জন্য সাহিত্যে তিনি নোবেল পুরস্কার পান। লেখালিখির বাইরে রবীন্দ্রনাথ তার শিক্ষার আদর্শ ও পল্লী সংগঠনের ভাবনাকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য বোলপুরে শান্তিনিকেতন এবং শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠা করেন।
অরূপ তোমার বাণী: রবীন্দ্রনাথের জীবন এবং সৃষ্টি আজও দারুণভাবে প্রাসঙ্গিক। পরবর্তী বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ প্রভাব অনস্বীকার্য। এমনকী আত্মপ্রতিষ্ঠার তাগিদে কল্লোলের কবিরা রবীন্দ্রনাথকেই কেন্দ্র করে রবীন্দ্র-বিরোধিতা করেছিলেন। ‘মাথার উপরে জ্বলিছেন রবি’—নজরুলের এই উক্তি সত্যেরই স্বীকৃতি। রবীন্দ্রনাথের লেখায় যেমন নারীর সত্যেরই স্বীকৃতি। রবীন্দ্রনাথের লেখায় যেমন নারীর নিজস্ব কণ্ঠ উচ্চারিত হয়েছে আবার মুক্তধারা, রক্তকরবী নাটকে যন্ত্রসভ্যতার বিরুদ্ধে শোনা গেছে বলিষ্ঠ প্রতিবাদ। ‘কালের যাত্রায় পাওয়া গেছে সমাজ পরিবর্তনের ইঙ্গিত। পরাধীন ভারতবর্ষে রবীন্দ্রনাথ শুনিয়েছেন জাতীয়তার মন্ত্র এবং সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে গানে, কবিতায় ও গদ্য লেখায় দৃপ্ত কণ্ঠ থেকেছেন তিনি। এভাবেই বিভিন্ন সময়ে নানা সামাজিক ও রাজনৈতিক সংকটের আবর্তে দাঁড়িয়ে সঠিক পথের সন্ধানে আর বেঁচে থাকার দিগ্দর্শনের জন্য আজও বাঙালিকে দ্বারস্থ হতে হয় রবীন্দ্রনাথের।
হে নূতন দেখা দিক আর বার: “আমার হৃদয়ে তোমার উজ্জ্বল উপস্থিতি”- –এ কোনো কবির ব্যক্তিগত কথা নয়, জাতির মনের কথা। তাই বাংলায় এবং বহির্বাংলায় বিখ্যাত চলচ্চিত্রকাররা আজও রবীন্দ্রনাথের লেখা নিয়ে সিনেমা করেন এবং তা প্রচুর দর্শকের প্রশংসা পায়। সিনেমায় অনায়াসে ঘটানো হয় রবীন্দ্রনাথের গানের ব্যবহার। মঞ্চে বারেবারে অভিনীত হয় বিসর্জন, রক্তকরবী, ডাকঘর বা চিরকুমার সভার মতো নাটক। রবীন্দ্রনাথের গানের ডিস্ক এখনও পুজোয় বহুল সংখ্যায় বিক্রি হয়, আর নবীন প্রজন্মের শিল্পীরা নতুন আঙ্গিকে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। জাতির এই প্রাণস্পন্দনকে সম্মান জানাতে বাধ্য হয় রাষ্ট্রও। তাই রবীন্দ্রনাথের দেড়শো বছরের জন্মজয়ন্তীতে ভারত সরকার তা উদ্যাপনের উদ্যোগ নেন। প্রকাশ করা হয় বিশেষ স্মারক মুদ্রা। ভারত ও বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে জন্মজয়ন্তী পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এমনকী ইউনেসকো-ও একই সিদ্ধান্তের শরিক হয়। এভাবেই আজও রবীন্দ্রনাথ সর্বমানবিক এবং সর্বজাগতিক থেকে যান।
আমার ভিতর-বাহিরে অন্তরে অন্তরে: যে মানুষ ছেলের মৃত্যুশোকের মধ্যে দাঁড়িয়ে গান লেখেন, দুঃখের বিষণ্ণতাকে অতিক্রম করে শান্তি, আনন্দ আর অনন্তের সন্ধান করেন—আমাদের ভেঙে পড়ায়, অজস্র পতন, পচন আর অবক্ষয়ে তিনি ছাড়া আর কে অবলম্বন হবেন? তিনি রবীন্দ্রনাথ—প্রেমে, প্রতিবাদে, ধর্মে আর প্রথার বিরোধিতায় এক পূর্ণতার প্রতীক। আমাদের একমাত্র জীবন্ত ঠাকুর। অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের কবিতাই হতে পারে এই আলোচনার উপসংহার—
“পশ্চাতে শত্রুরা শরঅগণন হানুক ধারালো, সম্মুখে থাকুন বসে পথরুধি রবীন্দ্র-ঠাকুর, আপনচক্ষের থেকে জ্বালিব যে তীব্র তীক্ষ্ণ আলো যুগসূর্য ম্লান তার কাছে।”
Full PDF
এই নোট টা যেকোনো সময় পড়া এবং সঞ্চয় করে রাখার জন্য নিচের ডাউনলোড বাটানে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে পারো।
শেষ কথা
আয়ন বায়ু কাকে বলে? প্রশ্নটি মাধ্যমিকের ভূগোলের সিলেবাস এর গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আপনি সবথেকে Parfact উত্তর পেয়েছেন।
আমরা বিনামূল্যে এমনই সমস্ত রকম শিক্ষার্থীকে উপকার করে থাকি। আপনারাও আমাদেরকে এইভাবে সুন্দর কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য আপনার বন্ধুদের শেয়ার করে আমাদেরকে আরো উৎসাহ বাড়াতে পারেন।
👇 যদি কোনো প্রশ্ন Proshnojagat-এ না থাকে তাহলে জানাও 👇